সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

শুভ জম্মদিন ও একজন স্বপ্নের ফেরিওয়ালার গল্প ।।




The Wright Brothers  প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই আকাশের দিকে তাকিয়ে পাখির উড়া দেখতেন। দেখতে দেখতে এক সময় পাখির মত আকাশে উড়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। একদিন তাদের স্বপ্ন সফল হল। পাখি হয়ে আকাশে উড়ে নয়, উড়োজাহাজ আবিস্কার করে আকাশ উড়ে।

প্রতিটি জীবনে স্বপ্ন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্বপ্ন বা vision জীবনকে guide করে, স্বপ্ন ছাড়া জীবন হচ্ছে সুনির্দিষ্ট গন্তব্য ছাড়া দূরপাল্লার যাত্রার মত। তবে এ স্বপ্ন রাতে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখা নয়।

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের মতে স্বপ্ন সেটাই যেটা অর্জনের জন্য আমাদেরকে ঘুমাতে দেয় না। স্বপ্ন দেখানো আরো কঠিন কাজ। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাঈদ স্যার সারাটা জীবন জুরেই স্বপ্ন ফেরী করেছেন। বিভিন্ন সভা সমাবেশ বক্তৃতা আর লেখার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ড: জাফর ইকবাল।

আমাদের সমাজ জীবনের ক্ষুদ্র পরিসরে প্রতিদিন  Social Media, পত্রিকায় লেখালেখির মাধ্যমে, চ্যানেলে সাক্ষাতকার, কমিউনিটি রেডিওর টক শোতে এমনকি মাঠে ঘাটে সভা সমাবেশ আর উঠান বৈঠকে যে মানুষটি এ অঞ্চলের তরুন প্রজম্মকে দিন বদলের কথা বলছেন, নিজেকে বদলে যাওয়ার কথা বলছেন, স্বপ্ন দেখাচ্ছেন, চোখের সামনে vision তুলে ধরে তরুনদের উদ্ধুদ্ধ করছেন, উৎসাহিত করছেন যিনি তিনি আমাদের অত্যন্ত প্রিয় ব্যক্তি আমতলী প্রেসক্লাবের সভাপতি ও বেসরকারী উন্নায়ন সংস্থা নজরুল স্মৃতি সংসদ- এনএসএস'র নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট শাহাবুদ্দিন পাননা।

ছাত্র জীবনেই জড়িয়ে পরেন  সাংবাদিকতার মত মহৎ পেশায় তার মতে কঠিন নেশায় । কাজ করেন The Bangladesh Observer এবং  বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা- বাসস  এর বরগুনা জেলা প্রতিনিধি হিসাবে। বর্তমানে কাজ করছেন The  Daily  Observer এর  বরগুনা জেলা প্রতিনিধি হিসাবে এবং দৈনিক ইত্তেফাকের আমতলী উপজেলা প্রতিনিধি হিসাবে। দীর্ঘদিন বরগুনা প্রেসক্লাবের সদস্য আমতলী প্রেসক্লাবের সভাপতিসহ বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সনের মেয়াদকালে পুনরায় সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।দীর্ঘ প্রায় ৩০ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে তিনি সৎ সাহসী এবং পেশাদারিত্বের এক অনন্য উদাহরণ এবং সামাজিক বিভিন্ন কর্মকান্ডে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

সামাজিক সাংস্কৃতিক অঙ্গনে রয়ছে সক্রিয় পদচারণা। খেলাঘর, শিল্পকলা পরিষদের সাথে যুক্ত ছিলেন দীর্ঘদিন। ছিলেন শিল্প কলা পরিষদের নির্বাচিত  সহ সম্পাদক এবং  সম্পাদক বাহাদুর খান মারা যাওয়ার পর সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। উদীচী এবং জনতা পাঠাগারের সাথে যুক্ত আছেন দীর্ঘদিন।মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজম্মকে উদ্ধুদ্ধ করার জন্য যুক্ত হন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটির সাথে। দায়িত্ব পালন করেন আমতলী সম্পাদক হিসাবে। গণজাগরণ মঞ্চের সাথেও যুক্ত হন এবং সদস্য সচিবের দায়িত্ব করেন।

১৯৯৬ সনে আইন ব্যবসার মাধ্যমে পেশা জীবন শুরু করলেও ২০০০ সনে এনএসএস'র নির্বাহীপরিচালক হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এনএসএস এ অঞ্চলে দরিদ্র,পিছিয়ে পরা নারী, জলবায়ূ পরিবর্তন ও দুর্যোগের ঝুকি মোকাবেলায় একটি পরিচিত বেসরকারী সংস্থা। সিডর পরবর্তী সময়ে স্বচ্ছতার সাথে ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করে এনএসএস অর্জন করেন ব্যাপক সুনাম এবং গ্রহণযোগ্যতা।অত্যন্ত কাছ থেকে আমারও সুযোগ হয়েছিল এনএসএস'র এ কার্যক্রম দেখা।

সামাজিক কার্যক্রম, অধিকার প্রতিষ্ঠা, স্থানীয় সমস্যা নিয়ে সকল  আন্দোলনে তার ভূমিকা অত্যন্ত দৃশ্যমান ।নরসুন্দর 
অমলের ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান পুনরুদ্ধার, ফায়ার স্টেশন ফিরিয়ে আনা, কলেজ জাতীয়করণ আন্দোলন, সুবন্ধি বাধ,সংসদীয় আসন পুনবিন্যাস ও আমতলীকে জেলায় উন্নীত করার দাবীতে আন্দোলনে সামনের সারির একজন শাহাবুদ্দিন পাননা। দিন বদল এবং তথ্য প্রযুক্তি বিকাশের ধারায় একঝাক স্বপ্নবাজদের সাথে নিয়ে আমতলীর সমস্যা সম্ভাবনা নিয়ে People's Voice of Amtali -PVA ফেসবুক গ্রুপ ইতিমধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে।

ভারতের একজন বিখ্যাত মানবাধিকার কর্মী মেধা পাটকার। একটি নদীতে জলবিদ্যুৎ করার ফলে  জনপদ প্লাবিত হওয়ার প্রতিবাদে দীর্ঘদিন আন্দোলন করেন তিনি। তার আন্দোলনের একটি ডকুমেন্টারী দেখছিলাম। বার বার আন্দোলনে ব্যর্থ হয়েও তিনি হাল ছাড়েননি, লেগে থাকার কারনে তিনি সফল হয়েছেন। রাজনৈতিক সামাজিক প্রতিকূলতার মধ্যেও আপনিও লেগে আছেন, লক্ষ্যে অবিচল থাকুন,  আমরা অবশ্যই আপনার সাথে আছি সফলতা অবশ্যই আসবে। আপনার লেখা থেকে দান্তের উদ্ধৃতিটি  ধার করে আমিও বলব সাহসীকতার সাথে এগিয়ে যান।

দুই যুগেরও বেশী সময় একত্রে চলা এ মানুষটির জন্য অপনাদেের সকলের কাছে তার দীর্ঘায়ু ও সুস্থ্যতা কামনা করছি।
মনিরুজ্জামান সুমন,সাংবাদিক। 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মামনির জন্মদিন: স্বপ্নের চেয়েও বড় হও।

১৯২৮ সন। পন্ডিত জহরলাল নেহেরু তখন এলাহবাদে। আর ১০ বছরের ইন্দিরা গান্ধী থাকেন হিমালয়ের কোলঘেসে মূসৌরী শহরে। যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম চিঠি। নেহেরু প্রায়ই মেয়েকে চিঠিতে প্রকৃতি, পৃথিবী ও মানব সভ্যতার বিকাশসহ ভারতের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে লিখতেন। ১৯২৯ সনের নভেম্বর মাসে এসব চিঠি নিয়ে মা-মনিকে-বাবা নামে একটি বই প্রকাশিত হলে তা ইতিহাসের অংশ হয়ে যায় । বর্তমানে এটি ভারতের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে এবং রেফারেন্স বুক হিসাবে পড়ানো হয়।কুটনৈ তিক ফারুক চৌধুরীর কুটনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা প্রিয় ফারজানাও আমাদের ভ্রমন সাহিত্য ও ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। প্রত্যেক পিতাই দূরে থাকা সন্তানদের প্রতি কিছু পরামর্শ, কিছু নির্দেশনা দিয়ে থাকে। আগে চিঠি লিখত,এখন তার জায়গায় ইমেইল, মোবাইল বা সোশ্যাল মিডিয়া ।এজন্য নির্দেশনাটাও বেশী । এটা কর, ওটা কর না । সন্ধ্যার আগেই বাসায় বা হলে ফের। রাত কর না। রাজনীতিতে জড়িও না, কোটা সংস্কার আন্দোলন কিংবা নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে যেও না। কারন অভিভাবকরা সব সময় সন্তানকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকে, মেয়ে হলে তো কথাই নেই । সন্তানরা হয়ত ভাবে, আমরা বড় হয়েছি এত ট...

সুবন্ধি বাধ, একজন জেলা প্রশাসক ও খালের দুপাড়ের অভাগা ৮০ হাজার মানুষ।।

বরগুনা জেলার সকল পর্যায়ের মানুষের খুব  মন খারাপ। ব্যক্তিগতভাবে আমারও। বরগুনা জেলার অত্যন্ত জনপ্রিয় জেলা প্রশাসক, সাধারণ মানুষের খুব কাছের ব্যক্তি  ড: মুহা: বশিরুল আলম চলে গেছেন। বিভিন্ন  মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার কারনে জেলা প্রশাসকের চলে যাওয়ার খবর এখন সুবন্ধি খালের দুপাড়ের ৮০ হাজার মানুষের মুখে মুখে। অনেকদিন ঢাকায় ছিলাম। আজকে অফিসেই দেখা হল চন্দ্রা, কাউনিয়া, লোদা এবং মহিষডাঙ্গার কয়েকজনের সাথে। দেখলাম তাদেরও খুব মন খারাপ। ২০০৮ সন থেকে সুবন্ধি বাধের কারনে আমতলী উপজেলার আমতলী, চাওড়া, হলদিয়া ইউনিয়ন  ও আমতলী পৌরসভার প্রায় ৮০ হাজার মানুষের কৃষি, পণ্য পরিবহন, জীবন জীবিকা এমনকি পানি ব্যবহার সংক্রান্ত দৈনন্দিন কাজ কর্ম মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। এ সংবাদ শুনে জেলা প্রশাসক স্যার শুধু নির্দেশনা দিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি নিজের চোখে সমস্যা দেখেছেন,ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কথা শুনেছেন,সমস্যা সমাধানের উপায় বের করার জন্য মিডিয়া, জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে একাধিক বার মতবিনিময় সভা করেছেন। Citizen's  Voice -Barguna এবং Public Service  Innovation Bangladesh এ তুলে ধরে ...