সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

৫০তম জম্মদিন: কিছু অকৃতিম ভালবাসা, কিছু প্রত্যাশা।

২২ অক্টোবর ছিল আমার ৫০ তম জম্মদিন। জীবনের ৪৯ টি বছর পেরিয়ে ৫০ বছরে পদার্পন করায় কাছের এবং দুরের অনেক বন্ধুরা ফোন করে, দেখা করে, সোশ্যাল মিডিয়ায়  শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, ভার্চুয়াল গিফট দিয়েছেন তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই, কৃতজ্ঞতা জানাই। বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই সাংবাদিক মনিরুজ্জামান সুমনকে একটা অসাধারণ লেখার মাধ্যমে  জম্মদিনের শুভেচ্ছা জানানোর জন্য। ধন্যবাদ জানাচ্ছি রাব্বি, অনন্যা ও বুশরাকে কেক কেটে,  মোমবাতি জ্বালিয়ে ৫০ তম জম্মদিনকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য। শত ব্যস্ততার মাঝেও কয়েকজন বন্ধু দিনটি মনে রেখেছেন, বরীন্দ্র সরোবরে আয়োজন করেছেন ছোট্ট আড্ডার। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি তাদের প্রতিও। ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারনে এসব ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানাতে, কৃতজ্ঞতা জানাতে বিলম্ব হওয়ায় আন্তরিকভাবে দুখ প্রকাশ করছি।

একটা মধ্যবিত্ত পরিবারে আমার  জম্ম। শৈশব বেড়ে উঠেছে গ্রামীণ পরিবেশে । মেঠো পথ,ধানের সোধা গন্ধ আর মুর্শিদি- মারফতি গানের অসাম্প্রদায়িক চেতনা শিশু মনকে কিছুটা হলেও করেছে প্রভাবিত। কৈশোর কেটেছে দেশের সর্বদক্ষিনের অবহেলিত একটি  উপজেলা শহরে। জম্মদিন পালন বর্তমান সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়  হলেও আমরা এরসাথে কোনভাবেই পরিচিত ছিলাম না। ধনাঢ্য,মর্ডান বা  ফ্যাশনাবল দুএকটি পরিবারে এ সংস্কৃতির ছোয়া লাগলেও আমাদের কাছে এটা  শুধু বিলাশিতাই ছিল না, ছিল পুজিবাদী সংস্কৃতির  অনুষঙ্গ।  কারন স্বজন হারানোর একটি রাজনৈতিক প্রেক্ষিত স্কুল জীবনেই বুঝে হোক না বুঝে হোক আমাকে  সমাজতন্ত্রে  অনুরক্ত করেছিল,মার্কসবাদে উজ্জীবিত করেছিল।শোষন বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার একটি রঙ্গিন স্বপ্ন চোখের সামনে জ্বল জ্বল করায় পুজিবাদী সংস্কৃতির অনুষঙ্গ । 

জম্মদিন পালনের ধারণা বা চর্চা কখনোই আকর্ষন করেনি বরং একটা নেতিবাচক মনোভাব তৈরী করেছিল। সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যাপক প্রসারের আগ পর্যন্ত গত ৪৯ বছরে জম্মদিনটি সার্টিফিকেটেই ছিল এবং কখনো কেউ শুভেচ্ছা জানিয়েছে বলে মনে পরে না ।

জুকারবার্গের কল্যানে প্রতিবছর  দিনটি এখন আমাকে এবং বন্ধুদেরকে স্মরণ করিয়ে দেয়। মহাকালের হিসাবে ৫০ বছর খুবই সামান্য কিন্তু আমার জীবনে অর্ধশতাব্দি একটি গুরুত্বপূর্ণ  অধ্যায়। ৫০ তম জম্মদিনকে স্মরণীয় করার জন্য শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তারা  আমাকে শুধু অণুপ্রাণিতই করেননি আরো সামাজিক দায়বদ্ধতায় বেধেছেন। আমিও চেষ্টা করব, এ বন্ধন অটুট রাখতে, জীবনের বাকী সময়টা সুখ -দুখে আপনাদের পাশে থাকতে । ভালবেসে সখি নিভৃতে যতনে আমার নামটি লিখো তোমার মনেরো মন্দিরে।আমারো পরানে যে গান বাজিছে তাহার তালটি শিখো তোমার মনেরো মন্দিরে। 

রবীন্দ্রনাথের এই গানের সাথে সুর মিলিয়ে আমিও বলব চলার পথে শত ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখে মনের মন্দিরে সামান্য জায়গা দিও।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মামনির জন্মদিন: স্বপ্নের চেয়েও বড় হও।

১৯২৮ সন। পন্ডিত জহরলাল নেহেরু তখন এলাহবাদে। আর ১০ বছরের ইন্দিরা গান্ধী থাকেন হিমালয়ের কোলঘেসে মূসৌরী শহরে। যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম চিঠি। নেহেরু প্রায়ই মেয়েকে চিঠিতে প্রকৃতি, পৃথিবী ও মানব সভ্যতার বিকাশসহ ভারতের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে লিখতেন। ১৯২৯ সনের নভেম্বর মাসে এসব চিঠি নিয়ে মা-মনিকে-বাবা নামে একটি বই প্রকাশিত হলে তা ইতিহাসের অংশ হয়ে যায় । বর্তমানে এটি ভারতের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে এবং রেফারেন্স বুক হিসাবে পড়ানো হয়।কুটনৈ তিক ফারুক চৌধুরীর কুটনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা প্রিয় ফারজানাও আমাদের ভ্রমন সাহিত্য ও ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। প্রত্যেক পিতাই দূরে থাকা সন্তানদের প্রতি কিছু পরামর্শ, কিছু নির্দেশনা দিয়ে থাকে। আগে চিঠি লিখত,এখন তার জায়গায় ইমেইল, মোবাইল বা সোশ্যাল মিডিয়া ।এজন্য নির্দেশনাটাও বেশী । এটা কর, ওটা কর না । সন্ধ্যার আগেই বাসায় বা হলে ফের। রাত কর না। রাজনীতিতে জড়িও না, কোটা সংস্কার আন্দোলন কিংবা নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে যেও না। কারন অভিভাবকরা সব সময় সন্তানকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকে, মেয়ে হলে তো কথাই নেই । সন্তানরা হয়ত ভাবে, আমরা বড় হয়েছি এত ট...

শুভ জম্মদিন ও একজন স্বপ্নের ফেরিওয়ালার গল্প ।।

The Wright Brothers  প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই আকাশের দিকে তাকিয়ে পাখির উড়া দেখতেন। দেখতে দেখতে এক সময় পাখির মত আকাশে উড়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। একদিন তাদের স্বপ্ন সফল হল। পাখি হয়ে আকাশে উড়ে নয়, উড়োজাহাজ আবিস্কার করে আকাশ উড়ে। প্রতিটি জীবনে স্বপ্ন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্বপ্ন বা vision জীবনকে guide করে, স্বপ্ন ছাড়া জীবন হচ্ছে সুনির্দিষ্ট গন্তব্য ছাড়া দূরপাল্লার যাত্রার মত। তবে এ স্বপ্ন রাতে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখা নয়। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের মতে স্বপ্ন সেটাই যেটা অর্জনের জন্য আমাদেরকে ঘুমাতে দেয় না। স্বপ্ন দেখানো আরো কঠিন কাজ। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাঈদ স্যার সারাটা জীবন জুরেই স্বপ্ন ফেরী করেছেন। বিভিন্ন সভা সমাবেশ বক্তৃতা আর লেখার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ড: জাফর ইকবাল। আমাদের সমাজ জীবনের ক্ষুদ্র পরিসরে প্রতিদিন  Social Media, পত্রিকায় লেখালেখির মাধ্যমে, চ্যানেলে সাক্ষাতকার, কমিউনিটি রেডিওর টক শোতে এমনকি মাঠে ঘাটে সভা সমাবেশ আর উঠান বৈঠকে যে মানুষটি এ অঞ্চলের তরুন প্রজম্মকে দিন বদলের কথা বলছেন, ...

সুবন্ধি বাধ, একজন জেলা প্রশাসক ও খালের দুপাড়ের অভাগা ৮০ হাজার মানুষ।।

বরগুনা জেলার সকল পর্যায়ের মানুষের খুব  মন খারাপ। ব্যক্তিগতভাবে আমারও। বরগুনা জেলার অত্যন্ত জনপ্রিয় জেলা প্রশাসক, সাধারণ মানুষের খুব কাছের ব্যক্তি  ড: মুহা: বশিরুল আলম চলে গেছেন। বিভিন্ন  মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার কারনে জেলা প্রশাসকের চলে যাওয়ার খবর এখন সুবন্ধি খালের দুপাড়ের ৮০ হাজার মানুষের মুখে মুখে। অনেকদিন ঢাকায় ছিলাম। আজকে অফিসেই দেখা হল চন্দ্রা, কাউনিয়া, লোদা এবং মহিষডাঙ্গার কয়েকজনের সাথে। দেখলাম তাদেরও খুব মন খারাপ। ২০০৮ সন থেকে সুবন্ধি বাধের কারনে আমতলী উপজেলার আমতলী, চাওড়া, হলদিয়া ইউনিয়ন  ও আমতলী পৌরসভার প্রায় ৮০ হাজার মানুষের কৃষি, পণ্য পরিবহন, জীবন জীবিকা এমনকি পানি ব্যবহার সংক্রান্ত দৈনন্দিন কাজ কর্ম মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। এ সংবাদ শুনে জেলা প্রশাসক স্যার শুধু নির্দেশনা দিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি নিজের চোখে সমস্যা দেখেছেন,ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কথা শুনেছেন,সমস্যা সমাধানের উপায় বের করার জন্য মিডিয়া, জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে একাধিক বার মতবিনিময় সভা করেছেন। Citizen's  Voice -Barguna এবং Public Service  Innovation Bangladesh এ তুলে ধরে ...