এ অঞ্চলের উন্নয়নের গেটওয়ে আমতলী উপজেলাকে জেলায় উন্নীত করার দাবীতে দিন দিন স্বোচ্চার হচ্ছে আমতলী ও তালতলী উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ । আমতলী নাগরিক ফোরাম ইতিমধ্যে জেলা ঘোষনার দাবীতে অভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করার উদ্যোগ নিয়েছে । নাগরিক ফোরাম গত ১০ আগস্ট আমতলী উপজেলা পরিষদ চত্বরে জেলার দাবীতে এক বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচীর আয়োজন করে। প্রবল বর্ষন উপেক্ষা করে দল -মত নির্বিশেষে প্রায় কয়েক হাজার মানুষ মানব বন্ধন কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা আমতলীকে জেলা ঘোষনা করার দাবী জানান ।
আমতলী দক্ষিনাঞ্চলের একটি প্রাচীন জনপদ। ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে আমতলীর গুলিশাখালীতে একটি প্রশাসনিক থানা স্থাপন করা হয় । বরগুনা ও খেপুপাড়া গুলিশাখালী থানাধীন ছিল । নদী ভাংগন এবং এক প্রান্তে হওয়ায় ১৯০১ সনে গুলিশাখালী থানা হেড-কোয়ার্টার মধ্যবর্তী স্থান আমতলীতে স্থানান্তর করা হয় এবং ১৯০৪ সনে থানার নামকরণ করা হয় আমতলী। সময়ের বিবর্তনে আমতলী থেকে বিভক্ত হয়ে বরগুনা আজ জেলা এবং কলাপাড়া একটি উন্নত জনপদ। অথচ তৎকালীন সময় আমতলীকে মহাকুমা করার কথা ছিল । ১৯৬৫ সালে মৌলিক গণতন্ত্রের অধীনে জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে আমতলীর প্রার্থী ডাঃ ফজলুর রহমান মাত্র ১ ভোটে হেরে যান এবং বিজয়ী এমএনএ আবদুল আজিজ ১৯৬৯ সনে আমতলীর দাবীকে অগ্রাহ্য করে বরগুনা সদরকে মহাকুমায় উন্নীত করেন। ১৯৮২ সালের ৩ নভেম্বর আমতলী থানা উপজেলায় রূপান্তরিত হয় এবং বরগুনাকে জেলা ঘোষনা করা হয়। অন্যদিকে কুয়াকাটার পর্যটন কেন্দ্রসহ কলাপাড়া আজ একটি উন্নত জনপদ। ২০০১ সনের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমতলী-তালতলী নির্বাচনী এলাকা থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ২০০৮ সনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করা হলে স্বাভাবিকভাবে প্রত্যাশা ছিল তার নির্বাচনী এলাকা আমতলী-তালতলীকে ঘিরে এ অঞ্চলে ব্যাপক উন্নয়ন হবে। ইতিমধ্যে কুয়াকাটা যাওয়ার ৩টি নদীতে ব্রীজ নির্মান করা হয়েছে। কলাপাড়ায় তৃমাত্রিক শেরে বাংলা নৌ ঘাটি, দ্বিতীয় সাবমেরিন কেবল ল্যান্ডিং স্টেশন, ১৩২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ চলছে । তৃতীয় পায়রা সমুদ্র বন্দর তালতলীর পায়রা নদীর মোহনায় হওয়ার কথা থাকলেও সেটিও কলাপাড়ায় হয়েছে। অথচ এ অঞ্চলের উন্নয়নের গেটওয়ে আমতলী। সড়ক পথে আমতলীকে বাদ দিয়ে কুয়াকাটা, কলাপাড়া, পায়রা সমুদ্র বন্দর কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই। অথচ জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকা আমতলী-তালতলীর প্রত্যাশিত উন্নয়ন হয়নি। এ অঞ্চলের সুষম উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য আমতলী-কলাপাড়া-তালতলী উপজেলা নিয়ে আমতলীকে প্রশাসনিক জেলা ঘোষনার দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক এবং আমতলী-তালতলী উপজেলার ৩ লক্ষ মানুষের প্রাণের দাবী।
ভৌগলিক অবস্থান এবং কৌশলগত দিক বিবেচনা করে আমতলীকে প্রশাসনিক জেলা ঘোষনা করার জন্য আমতলী-তালতলী উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন