সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আমতলী মুক্ত দিবস,প্রেসক্লাবের আয়োজনে বিভিন্ন কর্মসুচি।।


আজ ১৪ ডিসেম্বর। আমতলী মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সনের ১২ ডিসেম্বর মুক্তিবাহিনী নৌকা যোগে আমতলীর গুলিশাখালী বাজারে পৌছেন এবং সেখান থেকে রাতে অস্থায়ী ক্যাম্প কুকুয়ার সোহরাওয়ার্দী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে আসেন। গলাচিপার মুক্তিযোদ্ধা হারুন অর রশিদ ও আব্দুর রব মিয়ার নেতৃতে মুজিব বাহিনীর একটি দল যৌথভাবে আমতলী থানায় অপারেশন চালানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করে। সে সময় আমতলী থানায় পাক বাহিনী ছিল না। থানায় ছিল ওসি রইস উদ্দিন ভূঁইয়া , কয়েকজন পুলিশ ও রাজাকার বাহিনী। আমতলী থানাকে বিনা যুদ্ধে মুক্ত করতে তৎকালীন আওয়ামীলীগ নেতা আসমত আলী আকন, ন্যাপ নেতা গাজী আমির হোসেন ও শিক্ষক দলিল উদ্দিন আহমেদ মুক্তিবাহিনী ও পুলিশের মধ্যে সমঝোতার উদ্যোগ নেন। ১৩ ডিসেম্বর সকালে তারা ওসি রইস উদ্দিন ভূঁইয়ার সাথে বৈঠক করেন। ওসি শান্তিপূর্নভাবে থানার দখল মুক্তিবাহিনীর হাতে ছেড়ে দিতে সম্মত হয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্পে তাদের মাধ্যমে চিঠি দেন। সন্ধ্যায় মুক্তি বাহিনী থানার পূর্বপাশে চাওড়া নদীর অপর পাড়ে পালবাড়ী ও একে স্কুল সংলগ্ন স্থানে অবস্থান নেয়। ওসি রইস উদ্দিন ভূঁইয়ার সমঝোতা পত্রটি ছিল একটি ফাঁদ। কথা ছিল মুক্তিযোদ্ধারা ১২ -০১ মিনিটে ফায়ার করলে ওসি রইস উদ্দিন ভূঁইয়া আত্মসমর্পন করবেন। কিন্তু মুক্তিবাহিনী রাতে ‘জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে এক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়লে রইস উদ্দিন ভূঁইয়ার বাহিনী ব্যাপক হারে গুলি বর্ষন শুরু করে। রাত ভর গুলি বিনিময়ের পর অবস্থা বেগতিক দেখে ওসি রইস উদ্দিন ও তার সঙ্গীরা সাদা পতাকা উত্তোলন করে ১৪ ডিসেম্বর সকালে আত্মসমর্পন করে।
সকাল ৮টায় আমতলী থানায় আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন আফাজ উদ্দিন বিশ্বাস এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন নুরুল ইসলাম পাশা তালুকদার এবং হানাদার মুক্ত হয় আমতলী।

দিবসটি উদযাপনের জন্য আমতলী প্রেসক্লাব সন্ধ্যায় আমতলী পৌরসভা চত্বরে এক কর্মসুচি গ্রহণ করেছে।কর্মসুচিতে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, বেসরকারী সংস্থা এনএসএস,
উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী ও খেলাঘরসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন সমবেত কন্ঠে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করবেন।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মামনির জন্মদিন: স্বপ্নের চেয়েও বড় হও।

১৯২৮ সন। পন্ডিত জহরলাল নেহেরু তখন এলাহবাদে। আর ১০ বছরের ইন্দিরা গান্ধী থাকেন হিমালয়ের কোলঘেসে মূসৌরী শহরে। যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম চিঠি। নেহেরু প্রায়ই মেয়েকে চিঠিতে প্রকৃতি, পৃথিবী ও মানব সভ্যতার বিকাশসহ ভারতের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে লিখতেন। ১৯২৯ সনের নভেম্বর মাসে এসব চিঠি নিয়ে মা-মনিকে-বাবা নামে একটি বই প্রকাশিত হলে তা ইতিহাসের অংশ হয়ে যায় । বর্তমানে এটি ভারতের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে এবং রেফারেন্স বুক হিসাবে পড়ানো হয়।কুটনৈ তিক ফারুক চৌধুরীর কুটনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা প্রিয় ফারজানাও আমাদের ভ্রমন সাহিত্য ও ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। প্রত্যেক পিতাই দূরে থাকা সন্তানদের প্রতি কিছু পরামর্শ, কিছু নির্দেশনা দিয়ে থাকে। আগে চিঠি লিখত,এখন তার জায়গায় ইমেইল, মোবাইল বা সোশ্যাল মিডিয়া ।এজন্য নির্দেশনাটাও বেশী । এটা কর, ওটা কর না । সন্ধ্যার আগেই বাসায় বা হলে ফের। রাত কর না। রাজনীতিতে জড়িও না, কোটা সংস্কার আন্দোলন কিংবা নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে যেও না। কারন অভিভাবকরা সব সময় সন্তানকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকে, মেয়ে হলে তো কথাই নেই । সন্তানরা হয়ত ভাবে, আমরা বড় হয়েছি এত ট...

শুভ জম্মদিন ও একজন স্বপ্নের ফেরিওয়ালার গল্প ।।

The Wright Brothers  প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই আকাশের দিকে তাকিয়ে পাখির উড়া দেখতেন। দেখতে দেখতে এক সময় পাখির মত আকাশে উড়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। একদিন তাদের স্বপ্ন সফল হল। পাখি হয়ে আকাশে উড়ে নয়, উড়োজাহাজ আবিস্কার করে আকাশ উড়ে। প্রতিটি জীবনে স্বপ্ন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্বপ্ন বা vision জীবনকে guide করে, স্বপ্ন ছাড়া জীবন হচ্ছে সুনির্দিষ্ট গন্তব্য ছাড়া দূরপাল্লার যাত্রার মত। তবে এ স্বপ্ন রাতে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখা নয়। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের মতে স্বপ্ন সেটাই যেটা অর্জনের জন্য আমাদেরকে ঘুমাতে দেয় না। স্বপ্ন দেখানো আরো কঠিন কাজ। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাঈদ স্যার সারাটা জীবন জুরেই স্বপ্ন ফেরী করেছেন। বিভিন্ন সভা সমাবেশ বক্তৃতা আর লেখার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ড: জাফর ইকবাল। আমাদের সমাজ জীবনের ক্ষুদ্র পরিসরে প্রতিদিন  Social Media, পত্রিকায় লেখালেখির মাধ্যমে, চ্যানেলে সাক্ষাতকার, কমিউনিটি রেডিওর টক শোতে এমনকি মাঠে ঘাটে সভা সমাবেশ আর উঠান বৈঠকে যে মানুষটি এ অঞ্চলের তরুন প্রজম্মকে দিন বদলের কথা বলছেন, ...

সুবন্ধি বাধ, একজন জেলা প্রশাসক ও খালের দুপাড়ের অভাগা ৮০ হাজার মানুষ।।

বরগুনা জেলার সকল পর্যায়ের মানুষের খুব  মন খারাপ। ব্যক্তিগতভাবে আমারও। বরগুনা জেলার অত্যন্ত জনপ্রিয় জেলা প্রশাসক, সাধারণ মানুষের খুব কাছের ব্যক্তি  ড: মুহা: বশিরুল আলম চলে গেছেন। বিভিন্ন  মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার কারনে জেলা প্রশাসকের চলে যাওয়ার খবর এখন সুবন্ধি খালের দুপাড়ের ৮০ হাজার মানুষের মুখে মুখে। অনেকদিন ঢাকায় ছিলাম। আজকে অফিসেই দেখা হল চন্দ্রা, কাউনিয়া, লোদা এবং মহিষডাঙ্গার কয়েকজনের সাথে। দেখলাম তাদেরও খুব মন খারাপ। ২০০৮ সন থেকে সুবন্ধি বাধের কারনে আমতলী উপজেলার আমতলী, চাওড়া, হলদিয়া ইউনিয়ন  ও আমতলী পৌরসভার প্রায় ৮০ হাজার মানুষের কৃষি, পণ্য পরিবহন, জীবন জীবিকা এমনকি পানি ব্যবহার সংক্রান্ত দৈনন্দিন কাজ কর্ম মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। এ সংবাদ শুনে জেলা প্রশাসক স্যার শুধু নির্দেশনা দিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি নিজের চোখে সমস্যা দেখেছেন,ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কথা শুনেছেন,সমস্যা সমাধানের উপায় বের করার জন্য মিডিয়া, জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে একাধিক বার মতবিনিময় সভা করেছেন। Citizen's  Voice -Barguna এবং Public Service  Innovation Bangladesh এ তুলে ধরে ...