সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

জানুয়ারী, ২০২০ থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

মতিউর রহমান বিএসসি, একজন সব্যসাচি শিক্ষক, একজন সফল সাংস্কৃতিক সংগঠক।।

১৯৮৪ সন। আমরা দশম শ্রেণীতে পড়ি। নবম শ্রেনীতে থাকাকালীন সময়েই কারিকুলাম পরিবর্তন করা হয়। ৮৫ এর ব্যাচটি ছিল শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পরীক্ষা নিরীক্ষার ব্যাচ। নবম শ্রেণীতে আমরা পদার্থ,রসায়ন জীববিজ্ঞান, ইতিহাস, পৌরনীতি সব বিষয় পড়েছি। পরে টাইপ ও সর্টহ্যান্ড ঐচ্ছিক ও ভুগোল সবার জন্য বাধ্যতামুলক করে বিজ্ঞান ও মানবিক গ্রুপ বিভাজন কর হয়। আমাদের ক্লাশে ভুগোল পড়াতেন যতদুর মনে পড়ে প্রথমে আজিজ স্যার পরে লতিফ স্যার এবং মোসলেম স্যার । একদিন স্যার ক্লাশে নেই আমরা হৈ চৈ করছি হঠাৎ মতি বিএসসি স্যার ক্লাশে ডুকে ভুগোল পড়ানো শুরু করলেন। আমরা তার পড়ানোর স্টাইল,অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশ, বিভিন্ন মহাদেশ সম্পর্কে জ্ঞানের গভীরতা এবং মানচিত্র আকার কৌশল দেখে আমরা শুধু অবাকই হইনি আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নিলাম হেড স্যারকে বলব মতি স্যার যেন ভুগোলের বাড়তি ক্লাশ নেন। মানবিক বিভাগ থেকে আমি ও বসির, বিজ্ঞান থেকে নুর জালাল ও জ.ই মামুন আকন স্যারকে বিষয়টি বললাম। স্যার আমাদের কথা শুনে মতি বিএসসি স্যারকে বাড়তি ক্লাশ নেয়ার অনুরোধ করলেন এবং স্যার টেস্ট পরীক্ষার পর বাড়তি ক্লাশ নিয়ে, সাজেশন ও নোট দিয়ে আমাদেরকে ভালভাবেই পরীক্...

শিকারি ও বুদ্ধিমান পাখি

একবার এক শিকারি ছোট্ট একটি পাখি ধরে ফেলল। পাখিটি খুব বুদ্ধিমান ছিল। পাখিটি শিকারির খুব প্রশংসা করতে লাগল যে, তুমি এতবড় শিকারি! জীবনে অনেক বাঘ মেরেছ, অনেক ভাল্লুক মেরেছ, এই করেছ, সেই করেছ। আমি একটা ছোট্ট পাখি, আমার ওজন ১০০ গ্রামও না, আমাকে খেয়ে তুমি কী করবে? আমাকে খেলে তো তোমার পেটের একটা কোনাও ভরবে না। তার চেয়ে বরং আমাকে ছেড়ে দাও। তোমাকে এমন তিনটি মূল্যবান বাণী শোনাব যা তোমার সারাজীবন কাজে লাগবে। এমনভাবে সে কথাবার্তা বলছিল যে শিকারির মন গলে গেল। কারণ তেল পেতে সবাই পছন্দ করে। আরেকজনকে গলানোর সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে তেল। সে ভেবে দেখল, ঠিকই তো। এত ছোট পাখি খেয়ে কোনো লাভ নেই। তার চেয়ে শুনি, পাখিটা কী বলতে চায়। হয়তো এতে আমার লাভ বেশি হবে। শিকারি রাজি হওয়ায় পাখিটি বলল, আমি প্রথম বাক্যটি বলব তোমার হাতের ওপর বসে, দ্বিতীয় বাক্যটি বলব এই গাছের ডালে বসে, তৃতীয় বাক্যটি বলবো গাছের মগডালে বসে। শিকারি বললো, ঠিক আছে। পাখি বলল, ‘কখনো অলীক কল্পনা কর না, যা অবাস্তব সেটা কখনো বিশ্বাস কর না’। শিকারি বলল, খুব ঠিক কথা। সত্যিই তাই। কখনো অবাস্তব কথায় বিশ্বাস করতে নেই। পাখ...

সীতা হরণ,রামের অস্থিরতা ও পিভিএ'র অনির্ধারিত আড্ডা।।

পৌরাণিক কাহিনীতে জমি চাষ করতে গিয়ে ভূমিতে লাঙলের আঘাতে সীতার জন্ম। অযোধ্যার রাজকুমার রাম তার ভাই লক্ষ্মণকে নিয়ে মিথিলায় গেলে মিথিলার রাজসভায় ধনুক ভেঙ্গে সীতাকে জয় করেন রাম।সীতাকে বিবাহের পর, রাম ১৪ বছরের জন্য বনবাসে গিয়ে চিত্রকুট পর্বতে স্বর্ণমৃগের পিছনে ছুটতে গিয়ে রাবণ সীতাকে হরণ করে। রামলক্ষ্মণ বানর ও ভল্লুকসেনার সাহায্যে রাবনবধ ও সীতা উদ্ধার করলেও, প্রজার প্রশ্ন নিরসন করতে সীতাকে শুধু অগ্নিপরীক্ষাই দিতে হয়নি রাম তাকে ত্যাগ করলে লব কুশকে গর্ভে নিয়ে সীতা আশ্রয় নেন বাল্মীকি মুনির আশ্রমে। সীতার চিন্তায় রাম অস্থির হয়ে ভাই ভরতকে রাজ্য পরিচালনার প্রস্তাব দিলে ভরত রামকে স্থির হতে বলেন। ভরতের কথা শুনে রাম তাকে বলেন সীতা ধ্যান, সীতা জ্ঞান, সীতা চিন্তামণি। সীতা বিনা আমি যেন মণিহারা ফণী। পিভিএ'র দুচার জন একত্রিত হলেই একটা জমজমাট আড্ডা হয়ে যায়। আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠে আমতলীর উন্নয়ন, রাজনীতি এবং সমকালীন ঘটনাবলী। আজকে লঞ্চে ঢাকা যাওয়ার পথে সেরকম একটি অনির্ধারিত আড্ডায় আবারো প্রমান হল আমাদের চিন্তায় মননে পিভিএ ধ্যান-জ্ঞান হয়ে উঠছে।

আমতলীর কৃতিমানদের নিয়ে'স্মৃতি চির অম্লান।।

আমতলী দক্ষিনাঞ্চলের একটি প্রাচীন জনপদ। ১৮৫৯ খ্রিস্টাব্দে আমতলীর গুলিশাখালীতে একটি প্রশাসনিক থানা স্থাপিত হয় । বরগুনা ও খেপুপাড়া গুলিশাখালী থানাধীন ছিল । নদী ভাংগন এবং এক প্রান্তে হওয়ায় ১৯০১ সনে গুলিশাখালী থানা হেড-কোয়ার্টার মধ্যবর্তী স্থান আমতলীতে স্থানান্তর করা হয় এবং ১৯০৪ সনে থানার নামকরণ করা হয় আমতলী। সময়ের বিবর্তনে আমতলী থেকে বিভক্ত হয়ে বরগুনা আজ জেলা এবং কলাপাড়া একটি উন্নত জনপদ। অথচ তৎকালীন সময় আমতলীকে মহাকুমা করার কথা ছিল । ১৯৬৫ সালে মৌলিক গণতন্ত্রের অধীনে জাতীয় পরিষদের নির্বাচনে আমতলীর প্রার্থী ডাঃ ফজলুর রহমান মাত্র ১ ভোটে হারার মধ্যদিয়ে আমতলীর ভাগ্য বিপর্যয় ঘটে। আমতলীকে মহাকুমায় উন্নীত করার দাবী অগ্রাহ্য করে ১৯৬৯ সনে বরগুনা মহকুমায় উন্নীত হয়। ১৯৮২ সালের ৩ নভেম্বর আমতলীকে উপজেলা এবং বরগুনাকে জেলা ঘোষনা করা হয়।অথচ সেদিন আমতলীর কৃতি সন্তান ডা: ফজলুর রহমান নির্বাচিত হলে আজকে জেলা হত আমতলী। তবে সময়ের বিবর্তনে আমতলী আজ অমিত সম্ভাবনাময়ী এক জনপদ। কলাপাড়া-আমতলী -তালতলীকে কেন্দ্র করে দক্ষিনাঞ্চলের যে উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ আমতলী তার gate way. আর এই সমৃদ্ধির পেছনে রয়েছে আমতল...

স্টিফেন হকিংস’র প্রেমিকা ও PVA এর সফলতা -ব্যর্থতার গল্প ।।

মাত্র ৩৮ ঘন্টা আগে পৃথিবীর সকল মায়া ত্যাগ করে চির বিদায় নিলেন বিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী A Brief History of Time বইয়ের লেখক Stephen William Hawking । ১৯৬৪ সন, হকিংস ক্যামব্রীজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বোনের বান্ধবী Jane Wilde কে প্রথম দেখাতেই প্রেমে পরে গেলেন । একেই বলে Love at the first sight । আর কি প্রেম, একদম সরাসরি ইনগেজমেন্ট এবং ১৯৬৫ সনে বিয়ে । তখনই হকিংস এর শরীরে motor neurone disease ধীরে ধীরে বাড়ছে। স্ত্রীর ভালবাসা আর সেবা পেয়ে হকিংস শুধু সুস্থ্য হয়ে উঠলেন না নতুন উদ্যমে শুরু করলেন লেখাপড়া আর কাজ । মিডিয়ার সামনে বলেই ফেললেন Jane Wilde এর সাথে প্রণয়ই আমাকে কিছুটা বাচতে এবং দুনিয়াটা ঝাকুনি দিতে শিখিয়েছে । People's Voice of Amtali- PVA শুরুতেই একটি চ্যালেঞ্জের মুখে পরেছে। বরগুনা জেলা প্রশাসন, সাংবাদিক ও বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের প্রচেষ্টায় সমস্যা তুলে আনা, তাৎক্ষনিক সমস্যা সমাধান করে Citizen's Voice-Barguna শুধু জনপ্রিয়তাই অর্জন করেনি Citizen's Journalism এর ক্ষেত্রে একটি role model হয়ে উঠেছে । এটি PVA এর জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। কারন সবাই CVB এর মত PVA ...

লক্ষী বাঈ খ্যাত লক্ষ্ণৌ, দক্ষিনাঞ্চলের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও আমতলীর মান্নাদে খ্যাত প্রিয় বল্লভ কর্মকারের সুস্থ্যতা কামনা।।

আমতলী দক্ষিনাঞ্চলের একটি প্রাচীন জনপদ।সামাজিক সাংস্কৃতিকভাবেও ছিল বেশ অগ্রগামী।ঐতিহ্যবাহী নুরজাহান ক্লাবকে ঘিরে ৫০ এর দশকের নাট্যচর্চা এবং তৎকালীন বাকেরগঞ্জ জেলা পর্যায়ে নাট্য প্রতিযোগিতায় আমতলীর থিয়েটার একাধিকবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় আমতলীর সংস্কৃতিকে পৌছে দিয়েছিল খ্যাতির শিখরে। ৮০ দশকে বরগুনা জেলা পর্যায়ে নাট্য প্রতিযোগিতায় আমতলীর উদীচীর ইলেকশন ক্যারিকেচার, অভিরাম পাওয়া রুটি ভক্ষন এবং ক্ষেপা পাগলার পেচাল এর সফল মঞ্চায়ন তারই ধারাবাহিকতা। শুধু কি নাটক, সঙ্গীত ও সাহিত্য চর্চার ক্ষেত্রেও আমতলী ছিল অনেক এগিয়ে। এ মাটিতে জম্ম নিয়েছেন অসংখ্য খ্যাতিমান শিল্পী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব । সময়টা ৮০ দশকের প্রথম দিকে। আমরা তখন স্কুলের ছাত্র। সন্ধ্যার পরে এবিএম চত্বর পাড় হলেই মনে হত আমি কোন কল্পনার জগতে এসেছি।একদিকে নুরু বারেকের দোকানে, ফয়সল ভাই , হারুন ভাই কুদ্দুস বিশ্বাস এবং পিছনে মাহবুব উল আলম ঝুন্টু তালুকদার, দেলোয়ার আকনের বাসায় ফুল ভলিউমে টেপ রেকর্ডারে মান্নাদে, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় সতিনাথ, মোহাম্মদ রফির গান বাজত, স্বপন ভাইর বাসায় বাজত ভুপেনের গান।অন্যদিকে অজয় কর্মকার, ফুল্টু...

ব্রাজিল সমর্থকদের কমিটি গঠন, এক বৃটিশ চালাক ভদ্রলোক ও পিভিএ'র পথচলা ।।

এক বাংলাদেশী নামকরা ডাক্তার লন্ডনে চাকরি না পেয়ে মানবতার সেবা এবং সহজ সরলভাবে জীবিকা নির্বাহ করার জন্য তাবু টানিয়ে অস্থায়ী ক্লিনিক খুলে বসল। তাঁবুর বাইরে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে লিখে দিল 'GET TREATMENT FOR £20 - IF NOT CURED GET BACK £100 বিফলে মূল্য ফেরত! এ দেখে এক ব্রিটিশ চালাক লোক চিন্তা করল একই সাথে বোকা বাঙালীকে জব্দ করা এবং ১০০ পাউন্ড ধান্ধা করার এই সুযোগ। একে তো ব্রিটিশ, তার উপর অতি বুদ্ধিমান ভাবুন একবার! যথারীতি ভদ্রলোক গিয়ে ডাক্তারকে বলল- আমার জিহ্বায় কোন কিছুর স্বাদ পাইনা, আমি কোন স্বাদ পরখ করতে পারিনা আমার চিকিৎসা করুন। ডাক্তার বুঝতে পেরে তার এসিস্ট্যান্টকে হাঁক দিয়ে বলল- একে ৪২০ নম্বর বোতল থেকে তিন ফোটা খাইয়ে দাও। ঔষধ খাওয়ানোর পর ভদ্রলোক চেঁচিয়ে উঠল- এটা তো কেরোসিন! ডাক্তার: গুড, আপনার জিহ্বা কাজ করা শুরু করেছে, ২০ পাউন্ড দিন। ২০ পাউন্ড হারিয়ে অনেক ভেবেচিন্তে ভদ্রলোক দ্বিতীয় দিন আবার আসল ভদ্রলোক : আমার স্মৃতি কাজ করছেনা, আপনি আমার চিকিৎসা করুন।এসিস্ট্যান্টকে হাঁক দিয়ে বলল- একে ৪২০ নম্বর বোতল থেকে চার ফোটা খাইয়ে দাও। খাওয়ানোর পর ভদ্রলোক রেগেমেগে একাকার। ব...

আমতলীর বঙ্গবন্ধু টাউন হল কেবলই স্মৃতি।।

১৯৭৩ সনের মে মাস। নিজামউদ্দিন আহমেদ মাত্র কয়েক মাস প্রথম জাতীয় সংসদে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। এসময়েই বঙ্গবন্ধু সরকার পর্যাযক্রমে প্রত্যেক থানায় একটি অডিটরিয়াম নির্মানের সিদ্ধান্ত নেন। সবচেয়ে তরুণ এমপি হিসাবে প্রাথমিক পর্যায়ে আমতলীকে এ কর্মসুচির আওতায় আনা হয়। জায়গা নির্ধারণ,অর্থ বরাদ্দ সম্পন্ন করে নভেম্বর ডিসেম্বর মাসে অডিটরিয়ামের নির্মান কাজ শুরু হয় । নির্মান কাজের দায়িত্বে ছিলেন আমতলীর বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম পাশা তালুকদার। প্রথম অডিটরিয়ামের নামকরণ করা হয় আমতলী টাউন হল। সে অনুযায়ী নিজামউদ্দিন আহমেদের পরামর্শে গাজী আমির হোসেন ও আতাহার উদ্দিন আকন ইংরেজী ATH দিয়ে টাউন হলের সামনের ডিজাইন করেন। কিন্তু ১৯৭৫ সনের ফেব্রুয়ারী মাসে নতুন নামকরণ করা হয় বঙ্গবন্ধু টাউন হল। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু স্বপরিবারে নিহত হলে টাউন হল অসমাপ্ত রেখে নির্মান কাজ বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় টাউন হলের ভিতরে গাছ গাছরায় ভরে যায়। ১৯৭৭ সনের দিকে শাহ আলম তালুকদারের উদ্যোগে স্থানীয়ভাবে চাদা তুলে এখানে একটি ব্যয়ামাগার করা হয়। কিছুদিন এটা ভালভাবে চললেও পরে বন্ধ হয়ে ...