১৯৮৪ সন। আমরা দশম শ্রেণীতে পড়ি। নবম শ্রেনীতে থাকাকালীন সময়েই কারিকুলাম
পরিবর্তন করা হয়। ৮৫ এর ব্যাচটি ছিল শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পরীক্ষা নিরীক্ষার
ব্যাচ। নবম শ্রেণীতে আমরা পদার্থ,রসায়ন জীববিজ্ঞান, ইতিহাস, পৌরনীতি সব
বিষয় পড়েছি। পরে টাইপ ও সর্টহ্যান্ড ঐচ্ছিক ও
ভুগোল সবার জন্য বাধ্যতামুলক করে বিজ্ঞান ও মানবিক গ্রুপ বিভাজন কর হয়। আমাদের ক্লাশে ভুগোল পড়াতেন যতদুর মনে পড়ে প্রথমে আজিজ স্যার পরে লতিফ স্যার এবং মোসলেম স্যার । একদিন স্যার ক্লাশে নেই আমরা হৈ চৈ করছি হঠাৎ মতি বিএসসি স্যার ক্লাশে ডুকে ভুগোল পড়ানো শুরু করলেন। আমরা তার পড়ানোর স্টাইল,অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশ, বিভিন্ন মহাদেশ সম্পর্কে জ্ঞানের গভীরতা এবং মানচিত্র আকার কৌশল দেখে আমরা শুধু অবাকই হইনি আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নিলাম হেড স্যারকে বলব মতি স্যার যেন ভুগোলের বাড়তি ক্লাশ নেন। মানবিক বিভাগ থেকে আমি ও বসির, বিজ্ঞান থেকে নুর জালাল ও জ.ই মামুন আকন স্যারকে বিষয়টি বললাম। স্যার আমাদের কথা শুনে মতি বিএসসি স্যারকে বাড়তি ক্লাশ নেয়ার অনুরোধ করলেন এবং স্যার টেস্ট পরীক্ষার পর বাড়তি ক্লাশ নিয়ে, সাজেশন ও নোট দিয়ে আমাদেরকে ভালভাবেই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করলেন ।বিএসসি শিক্ষক হিসাবে General Math, Elective Math, Physics, Chemestry সহ বিজ্ঞানের সাবজেকটে দক্ষতা থাকাটাই স্বাভাবিক কিন্তু তাই বলে ভুগোল, বাংলা, ইংরেজী, ইসলাম ধর্ম, পৌরনীতি, অর্থনীতি? কি না! কোন সাবজেকটে দক্ষতার সাথে পড়াতে পারতেন না। হ্যা এই সব্যসাচি শিক্ষক আর কেউ নন ঐতিহ্যবাহী আমতলী এ.কে পাইলট হাই স্কুলের সিনিয়র বিজ্ঞান শিক্ষক মো মতিউর রহমান বিএসসি,আমাদের প্রিয় মতি বিএসসি স্যার।
ভুগোল সবার জন্য বাধ্যতামুলক করে বিজ্ঞান ও মানবিক গ্রুপ বিভাজন কর হয়। আমাদের ক্লাশে ভুগোল পড়াতেন যতদুর মনে পড়ে প্রথমে আজিজ স্যার পরে লতিফ স্যার এবং মোসলেম স্যার । একদিন স্যার ক্লাশে নেই আমরা হৈ চৈ করছি হঠাৎ মতি বিএসসি স্যার ক্লাশে ডুকে ভুগোল পড়ানো শুরু করলেন। আমরা তার পড়ানোর স্টাইল,অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশ, বিভিন্ন মহাদেশ সম্পর্কে জ্ঞানের গভীরতা এবং মানচিত্র আকার কৌশল দেখে আমরা শুধু অবাকই হইনি আমরা সবাই সিদ্ধান্ত নিলাম হেড স্যারকে বলব মতি স্যার যেন ভুগোলের বাড়তি ক্লাশ নেন। মানবিক বিভাগ থেকে আমি ও বসির, বিজ্ঞান থেকে নুর জালাল ও জ.ই মামুন আকন স্যারকে বিষয়টি বললাম। স্যার আমাদের কথা শুনে মতি বিএসসি স্যারকে বাড়তি ক্লাশ নেয়ার অনুরোধ করলেন এবং স্যার টেস্ট পরীক্ষার পর বাড়তি ক্লাশ নিয়ে, সাজেশন ও নোট দিয়ে আমাদেরকে ভালভাবেই পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত করলেন ।বিএসসি শিক্ষক হিসাবে General Math, Elective Math, Physics, Chemestry সহ বিজ্ঞানের সাবজেকটে দক্ষতা থাকাটাই স্বাভাবিক কিন্তু তাই বলে ভুগোল, বাংলা, ইংরেজী, ইসলাম ধর্ম, পৌরনীতি, অর্থনীতি? কি না! কোন সাবজেকটে দক্ষতার সাথে পড়াতে পারতেন না। হ্যা এই সব্যসাচি শিক্ষক আর কেউ নন ঐতিহ্যবাহী আমতলী এ.কে পাইলট হাই স্কুলের সিনিয়র বিজ্ঞান শিক্ষক মো মতিউর রহমান বিএসসি,আমাদের প্রিয় মতি বিএসসি স্যার।
তিনি বরিশাল বিএম কলেজ থেকে আইএসসি পাশ করে ১৯৬৬ সনে
আমতলী এ.কে পাইলট হাই স্কুলে আইএসসি শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। মাঝখানে
এক বছর চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন। পরে ফরিদপুর রাজেন্দ্র
কলেজ থেকে বিএসসি পাশ করে আবার আমতলী এ.কে পাইলট হাই স্কুলে বিএসসি শিক্ষক
হিসাবে ফিরে আসেন। ২০০২ সনে আমতলী এ.কে পাইলট হাই স্কুল থেকে সিনিয়র
শিক্ষক হিসাবে অবসর গ্রহণ করেন।
শিক্ষকতা জীবনে শিক্ষার গুণগত মান
নিশ্চিত করা, এক্সট্রা কারিকুলার একটিভিটিস এবং ছাত্র -শিক্ষক সম্পর্কের
ক্ষেত্রে এক অসাধারণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।ক্লাশের বাইরে মতি বিএসসি স্যার
একজন আড্ডাবাজ বন্ধু বৎসল শিক্ষক-অভিভাবক। তার সাথে এক টেবিলে বসে চা
খায়নি এরকম ছাত্র খুজে পাওয়া যাবে না।
তিনি একাধারে একজন সব্যসাচী শিক্ষক, একজন জনপ্রিয় উপস্থাপক, সফল সাংস্কৃতিক সংগঠক, নাট্য অভিনেতা ও পরিচালক ছিলেন।
১৯৬৭ সনে তিনি আমতলীস্থ পাকিস্থান আর্টস কাউন্সিলের সাথে যুক্ত হন এবং নুরজাহান ক্লাবকে কেন্দ্র করে যে থিয়েটারের সমৃদ্ধ ধারা তৈরী হয়েছিল সে ধারার নেপথ্যের একজন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি যুক্ত ছিলেন আমতলী শিল্পকলা পরিষদের সহ সভাপতি হিসাবে , ছিলেন আমতলীর শিল্প সংস্কৃতির অন্যতম পুরোধা।
১৯৬৭ সনে তিনি আমতলীস্থ পাকিস্থান আর্টস কাউন্সিলের সাথে যুক্ত হন এবং নুরজাহান ক্লাবকে কেন্দ্র করে যে থিয়েটারের সমৃদ্ধ ধারা তৈরী হয়েছিল সে ধারার নেপথ্যের একজন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি যুক্ত ছিলেন আমতলী শিল্পকলা পরিষদের সহ সভাপতি হিসাবে , ছিলেন আমতলীর শিল্প সংস্কৃতির অন্যতম পুরোধা।
স্বাধীনতা দিবস কিংবা বিজয় দিবসের কুচকাওয়াজের ধারাভাষ্য,স্কুল কলেজের
বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, জাতীয় অনুষ্ঠান উপস্থাপনা -কোথায় না। মৃত্যুর
আগের দিন পর্যন্ত মতি বিএসসি স্যারকে ছাড়া এসব অনুষ্ঠান কখনো কেউ কল্পনা
করেনি। এমনকি চরকগাছিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এরকম একটি অনুষ্ঠান পরিচালনা
করতে গিয়েই স্যার অসুস্থ হয়ে পরেন।
অবসর গ্রহণের পরে আমতলীর
বিভিন্ন সামাজিক- সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত হয়েছিলেন আরো
ব্যাপকভাবে । কয়েকজন প্রবীণ ব্যক্তি এবং অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক একত্রিত হয়ে
গড়ে তুলেছিলেন মুক্ত জীবন নামের একটি সংগঠন ।
তার জন্ম ৩০
নভেম্বর ১৯৪২ সনে বেতাগী উপজেলার চান্দখালীর সাহেবের হাওলা গ্রামে । পিতা
মরহুম আবদুল হামিদ বৃটিশ সরকারের একজন কর্মচারী ছিলেন এবং একজন বিশিষ্ট
সমাজসেবক । ২৮ মার্চ, ২০০৮ সনে ঢাকার শমরিতা হাসপাতালে আমতলীর এই কৃতি
সন্তান আমাদের প্রিয় মতি স্যার ইন্তেকাল করেন ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন