আমতলী সরকারী কলেজের যাত্রা শুরু হয়েছে। গতকাল ২০ এপ্রিল আমাদের অত্যন্ত প্রিয়জন সংসদ সদস্য এ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারী কলেজের ফলক উম্মোচন করেছেন। গত ১৩ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব নাছিমা খানম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে ৭ এপ্রিল থেকে সরকারীকরণের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। এটি আমাদের কাছে অত্যন্ত আনন্দের বিষয় এবং আমতলী উপজেলা এমনকি এ অঞ্চলের মানুষের শিক্ষা সংস্কৃতির বিস্তার, মেধা ও মননের বিকাশ এবং উন্নয়নের জন্য এটি একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। আমরা এই ক্ষনটির অপেক্ষায় ছিলাম। স্থানীয় ছাত্র শিক্ষক সাংবাদিক সুশীল সমাজ কলেজ সরকারীকরণের দাবীতে আন্দোলনও করেছে। আমরা কতিপয় সংবাদকর্মী এবং আমতলী কলেজের দুএকজন শিক্ষক যখন এই ইস্যুতে আন্দোলন করার প্রস্তাব করছিলাম স্থানীয় নেতারা শুধু আমাদেরকে পাগল বলতে বাকী রেখেছেন। তবে ভাবভার সুযোগ নেই শুধু আন্দোলনের কারনেই কলেজ সরকারীকরণ হয়েছে। স্কুল কলেজ সরকারীকরণ একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত সুতরাং এ কৃতিত্ব একান্তভাবেই স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং সর্বোপরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার। কারন এ অঞ্চলের মানুষের প্রতি, এ জনপদের প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রয়েছে অকৃতিম ভালবাসা ও বিশেষ সহানুভূতি।
এ মাসের প্রথম সপ্তাহে কোলকাতায় নিউ মার্কেটের সামনে ছোট্ট চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলাম কলেজ স্ট্রীটের বুড়ো বইয়ের দোকানদার অমিতাভদার সাথে। কথা হচ্ছিল কোলকাতার শিক্ষা শিল্গ সংস্কৃতির বিকাশ ও বর্তমান অবস্থা নিয়ে। বিনয় ঘোষ তার বাংলার বিদ্বৎ সমাজসহ বিভিন্ন বইয়ে কোলকাতার মধ্যবিত্ত শ্রেনী, শিক্ষা শিল্গ সংস্কৃতির বিকাশে প্রেসিডেন্সি কলেজ ও বেথুন কলেজের ভূমিকার কথা বলেছেন । অমিতাভদার কাছে শুনলাম কলেজ স্ট্রীটের বইয়ের দোকান আর বই পড়া আন্দোলন গড়ে তুলবার জন্য এখানকার শিক্ষার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভূমিকার কথা। ৫২, ৭১ আর ৯০ এর আন্দোলন ও ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় - এ ইতিহাস আামাদের জানা।
জিও-পলিটিক্সে বঙ্গোপসাগরের গুরুত্ব বিশাল। বঙ্গোপসাগরকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠছে কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র, সোনাকাটা ইকোপার্ক, পায়রা সমুদ্র বন্দর, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। ঢাকা থেকে পায়রা বন্দর পর্যন্ত ট্রেন লাইন, পায়রা নদীতে ব্রীজ নির্মান সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় আছে। সরকার সপ্তম পঞ্চ বার্ষিক পরিকল্পনায় এ অঞ্চলের জন্য প্রায় সতের হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছেন। আর এ উন্নয়নের প্রবেশদ্বার বা gate way হচ্ছে আমতলী। আমতলীকে বাদ দিয়ে, এড়িয়ে গিয়ে কলাপাড়া বলুন, কুয়াকাটা বলুন,তালতলী বলুন কোথাও যাওয়ার সুযোগ নেই।
কলাপাড়া, কুয়াকাটা, তালতলীর সাথে সমানতালে আমতলীর উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে হলে আমতলী -তালতলী ভিন্ন সংসদীয় আসন এবং আমতলীকে জেলায় উন্নিত করা সময়ের দাবী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভালবাসা ও বিশেষ সহানুভূতিকে কাজে লাগিয়ে আমতলী -তালতলী নিয়ে ভিন্ন সংসদীয় আসন ও আমতলীকে জেলায় উন্নিত করার দাবীকে এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবীতে রুপান্তর করতে হলে প্রয়োজন একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা। আমার দৃঢ় বিশ্বাস এবং প্রত্যাশা আমতলী সরকারী কলেজকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা ছাত্র শিক্ষকসহ বিশেষ অগ্রসর সামাজিক শক্তি আমতলীকে জেলায় উন্নিত করার দাবীকে এগিয়ে নিয়ে যাবে, আমতলীর শিক্ষা সংস্কৃতির বিস্তার, মেধা ও মননের বিকাশসহ আমতলীকে উন্নয়নের রোল মডেল বানাবে ঠিক কলেজ স্ট্রীটের বুড়ো বইয়ের দোকানদারের গল্পের মত ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন