সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

শিক্ষা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব


গত কয়েকদিন ধরে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীরা ভ্যাট বিরোধী অান্দোলন করছে। এ অান্দোলন নিয়ে প্রিন্ট ইলেকট্রনিক্স ও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক তোলপাড় হচ্ছে। পক্ষে বিপক্ষে মতামত দিচ্ছেন। কেউ কেউ অান্দোলনকারী ছাত্র ছাত্রী সম্পর্কে এমনি বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বাজে নোংরা এবং অশালিন মন্তব্য করছেন। অান্দোলনের কৌশল, ছাত্র ছাত্রীদের ক্ষোভ প্রকাশের ভাষা বা পদ্ধতি নিয়ে দ্বিমত, ভিন্নমত থাকতেই পারে এটি যেকারো গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের টিউশন ফির উপর ভ্যাট আরোপের যৌক্তিকতার প্রশ্ন না তুলে যেভাবে অান্দোলনকারী ছাত্র ছাত্রী সম্পর্কে, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে নোংরা মন্তব্য করছেন, অশালিন ভাষায় গালাগাল করছেন তা শুধু যৌক্তিকই নয় অশোভন বটে।মনে রাখবেন, বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা লেখা পড়া করছেন তারা আমাদেরই ভাই বোন ও সন্তান। গঠনমূলক সমালোচনা করুন, দোহাই সীমা লংঘন করবেন না।
সকল পর্যায়ে শিক্ষা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের সাংবিধানিক দায়িত্ব। এ বছর সরকার শিক্ষা খাতে ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রেখেছে তারপরেও অবকাঠামোগত অপর্যাপ্ততা, শিক্ষক স্বল্পতার কারনে প্রায় সারে ৩ লক্ষ ছাত্র ছাত্রীর উচ্চ শিক্ষার সুযোগ রাষ্ট্র নিশ্চিত করতে পারেনি। এটি রাষ্ট্রের চরম ব্যর্থতা। রাষ্ট্র তার সাংবিধানিক দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কথা বিবেচনা না করে যেসব দরিদ্র,মধ্যবিত্ত ও প্রান্তিক পরিবারের সন্তান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ না পেয়ে অতিরিক্ত টিউশন ফি দিয়ে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখা পড়া করছেন, রাষ্ট্র টিউশন ফি না কমিয়ে, তাদের পাশে না দাড়িয়ে ভ্যাট আরোপ করে তাদের বিপক্ষে দাড়িয়েছেন। এ সিদ্ধান্ত চরম অযৌক্তিক, অসাংবিধানিক যা মাত্র ৩শ কোটি টাকার ভ্যাটের জন্য উচ্চ শিক্ষার সুযোগ সংকুচিত করবে এবং পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যে বৈষম্যের পাহাড় তৈরী করবে। শিক্ষা খাতে খরচ যদি বিনিয়োগ হয়ে থাকে একজন অভিভাবক হিসাবে সরকারের কাছে অনুরোধ করব অনতিবিলম্বে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের টিউশন ফির উপর ভ্যাট প্রত্যাহার করে অান্দোলনরত ছাত্র ছাত্রীদের ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে নিন, শিক্ষা খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে মধ্যম অায়ের দেশে উন্নীত হওয়ার প্রতিযোগিতায় এগিয়ে নিন।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

মামনির জন্মদিন: স্বপ্নের চেয়েও বড় হও।

১৯২৮ সন। পন্ডিত জহরলাল নেহেরু তখন এলাহবাদে। আর ১০ বছরের ইন্দিরা গান্ধী থাকেন হিমালয়ের কোলঘেসে মূসৌরী শহরে। যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম চিঠি। নেহেরু প্রায়ই মেয়েকে চিঠিতে প্রকৃতি, পৃথিবী ও মানব সভ্যতার বিকাশসহ ভারতের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে লিখতেন। ১৯২৯ সনের নভেম্বর মাসে এসব চিঠি নিয়ে মা-মনিকে-বাবা নামে একটি বই প্রকাশিত হলে তা ইতিহাসের অংশ হয়ে যায় । বর্তমানে এটি ভারতের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে এবং রেফারেন্স বুক হিসাবে পড়ানো হয়।কুটনৈ তিক ফারুক চৌধুরীর কুটনৈতিক জীবনের অভিজ্ঞতার আলোকে লেখা প্রিয় ফারজানাও আমাদের ভ্রমন সাহিত্য ও ইতিহাসের অংশ হয়ে গেছে। প্রত্যেক পিতাই দূরে থাকা সন্তানদের প্রতি কিছু পরামর্শ, কিছু নির্দেশনা দিয়ে থাকে। আগে চিঠি লিখত,এখন তার জায়গায় ইমেইল, মোবাইল বা সোশ্যাল মিডিয়া ।এজন্য নির্দেশনাটাও বেশী । এটা কর, ওটা কর না । সন্ধ্যার আগেই বাসায় বা হলে ফের। রাত কর না। রাজনীতিতে জড়িও না, কোটা সংস্কার আন্দোলন কিংবা নিরাপদ সড়কের আন্দোলনে যেও না। কারন অভিভাবকরা সব সময় সন্তানকে নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকে, মেয়ে হলে তো কথাই নেই । সন্তানরা হয়ত ভাবে, আমরা বড় হয়েছি এত ট...

শুভ জম্মদিন ও একজন স্বপ্নের ফেরিওয়ালার গল্প ।।

The Wright Brothers  প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠেই আকাশের দিকে তাকিয়ে পাখির উড়া দেখতেন। দেখতে দেখতে এক সময় পাখির মত আকাশে উড়ার স্বপ্ন দেখা শুরু করেন। একদিন তাদের স্বপ্ন সফল হল। পাখি হয়ে আকাশে উড়ে নয়, উড়োজাহাজ আবিস্কার করে আকাশ উড়ে। প্রতিটি জীবনে স্বপ্ন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। স্বপ্ন বা vision জীবনকে guide করে, স্বপ্ন ছাড়া জীবন হচ্ছে সুনির্দিষ্ট গন্তব্য ছাড়া দূরপাল্লার যাত্রার মত। তবে এ স্বপ্ন রাতে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখা নয়। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের মতে স্বপ্ন সেটাই যেটা অর্জনের জন্য আমাদেরকে ঘুমাতে দেয় না। স্বপ্ন দেখানো আরো কঠিন কাজ। বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সাঈদ স্যার সারাটা জীবন জুরেই স্বপ্ন ফেরী করেছেন। বিভিন্ন সভা সমাবেশ বক্তৃতা আর লেখার মাধ্যমে প্রতিনিয়ত নতুন প্রজন্মকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ড: জাফর ইকবাল। আমাদের সমাজ জীবনের ক্ষুদ্র পরিসরে প্রতিদিন  Social Media, পত্রিকায় লেখালেখির মাধ্যমে, চ্যানেলে সাক্ষাতকার, কমিউনিটি রেডিওর টক শোতে এমনকি মাঠে ঘাটে সভা সমাবেশ আর উঠান বৈঠকে যে মানুষটি এ অঞ্চলের তরুন প্রজম্মকে দিন বদলের কথা বলছেন, ...

সুবন্ধি বাধ, একজন জেলা প্রশাসক ও খালের দুপাড়ের অভাগা ৮০ হাজার মানুষ।।

বরগুনা জেলার সকল পর্যায়ের মানুষের খুব  মন খারাপ। ব্যক্তিগতভাবে আমারও। বরগুনা জেলার অত্যন্ত জনপ্রিয় জেলা প্রশাসক, সাধারণ মানুষের খুব কাছের ব্যক্তি  ড: মুহা: বশিরুল আলম চলে গেছেন। বিভিন্ন  মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়ার কারনে জেলা প্রশাসকের চলে যাওয়ার খবর এখন সুবন্ধি খালের দুপাড়ের ৮০ হাজার মানুষের মুখে মুখে। অনেকদিন ঢাকায় ছিলাম। আজকে অফিসেই দেখা হল চন্দ্রা, কাউনিয়া, লোদা এবং মহিষডাঙ্গার কয়েকজনের সাথে। দেখলাম তাদেরও খুব মন খারাপ। ২০০৮ সন থেকে সুবন্ধি বাধের কারনে আমতলী উপজেলার আমতলী, চাওড়া, হলদিয়া ইউনিয়ন  ও আমতলী পৌরসভার প্রায় ৮০ হাজার মানুষের কৃষি, পণ্য পরিবহন, জীবন জীবিকা এমনকি পানি ব্যবহার সংক্রান্ত দৈনন্দিন কাজ কর্ম মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে। এ সংবাদ শুনে জেলা প্রশাসক স্যার শুধু নির্দেশনা দিয়েই ক্ষ্যান্ত হননি নিজের চোখে সমস্যা দেখেছেন,ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের কথা শুনেছেন,সমস্যা সমাধানের উপায় বের করার জন্য মিডিয়া, জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সাথে একাধিক বার মতবিনিময় সভা করেছেন। Citizen's  Voice -Barguna এবং Public Service  Innovation Bangladesh এ তুলে ধরে ...